আউটসোর্সিং কি? কেন করবেন এবং কিভাবে করবেন? জেনে নিন আজই

আউটসোর্সিং নিয়ে বর্তমানে আমাদের বাংলাদেশে অনেক বেশি লেখালেখি হচ্ছে। রাতারাতি বড়লোক কিংবা রাতারাতি নিজেকে একটু বদলে নেবার আশা দিয়ে যারা বাহারি ও রকমারি বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে মানুষকে প্রতিনিয়ত আকৃষ্ট করার চেষ্টায় মত্ত হয়ে আছেন একটি শ্রেনীর মানুষ। অনলাইনে আয় করা যায় এমন অনেক বাহারি বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে অনেক বন্ধুরায় প্রতারিতও হচ্ছেন। কেউবা আবার বর্তমানে এই ক্ষেত্রটিকে (আউটসোর্সিং) সদ্য সমালোচিত এমএলএম ব্যাবসার সাথে গুলিয়ে ফেলছেন। বাস্তব প্রেক্ষাপটে আউটসোর্সিং আসলে কি ?
freelancing

আউটসোর্সিং কি?

শব্দটি আমাদের বাংলাদেশে যে খুব বেশি জনপ্রিয় কিংবা পরিচিত তা নয়, তবে কিছু শ্রেণীর অসাধু ব্যাবসায়ী আর লিপটপ বিজ্ঞাপনের কল্যাণে শব্দটি এখন অনেক মানুষের মনে নানাভাবে কৌতুহলের জন্ম দিয়ে চলছে, এবং ইতিমধ্যে আমাদের বাংলাদেশীদের কাছে আউটসোর্সিং শব্দটি অতি পরিচিত একটি শব্দ হিসাবে পরিচিতি পাচ্ছে। অন্যদিকে আউটসোর্সিং আবার অনেকের কাছে নিন্দিত একটি শব্দ হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে একিইভাবে। কিন্তু এমনটা কোনভাবেই হবার কথা মোটেও ছিল না। এখন থেকে ৭-৮ বছর আগেও আমাদের বাংলাদেশের মানুষ এই শব্দটির সাথে পরিচিত ছিল না বললেই চলে। সেই সময় যে আউটসোর্সিং এর কাজ হতনা তা নয়, কিন্তু সেই সময় এখনকার মত ছিল না। প্রতিযোগীতা মূলক এবং পরিবর্তনশীল বিশ্বায়নের এই সময়ে আমরা লক্ষ্য করছি তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে আর্থ-সামাজিকতার অস্থিরতার কারনে অর্থনৈতিক বৈশম্য দিনদিন বেড়েই চলছে এবং অব্যবস্থাপনার কারনে বেকার সমস্যা বাড়ছে প্রতিদিনই। বাংলাদেশও এর অংশে কম নয় এবং তার শিকার আমরা প্রতিনিয়ত হচ্ছিও বটে। যার কারণে আমারদের দেশের বেকার যুবকদের পাশাপাশি অল্প-স্বল্প আয়ের মানুষেরা জীবনের প্রয়োজনে বিকল্প আয়ের উৎস খুজছে। এই সুযোগে আউটসোর্সিং শব্দটি বাংলাদেশের মানুষের কাছে অতি দ্রুত পৌঁছেছে বলে আমার। আসলে কি এই আউটসোর্সিং ব্যবস্থার মাধ্যমে এই ধরণের সকল সমস্যার সমাধান সম্ভব ? এর সঠিক উত্তর হল সম্পূর্ণরুপে না হলেও অনেকাংশেই এর সম্ভব। তবে এর পেছনে বিভিন্ন রকমের কিন্তু জড়িত আছে বলে আমার ধারণা !! যেমন আমাদের বাংলাদেশের এখন যেখানে যায় না কেন, সেখানেই শোনা যায় এই আউটসোর্সিং এর কথা, যার উপস্থাপন হল কিভাবে “সহজ উপায়ে অনলাইনে আয়”।

freelancing

আপনি কি আউটসোর্সিং নিয়ে ক্যারিয়ার গড়তে আগ্রহী?

এত সহজে আমরা যদি অনলাইনে হাজার হাজার ডলার/টাকা আয় করতে পারতাম তাহলে পৃথিবী কোটি কোটি মানুষ শুধুই টাকা আয়ের জন্য দিন রাত পরিশ্রম বন্ধ করে শুধুই ঘরে বসে কম্পিউটার আর অনলাইন সংযোগ নিয়ে যার যার ঘরে বসে আয় করার জন্য উঠে পরে লেগে যেত, আর ঘরে বসে হাজার হাজার ডলার আয় করত। কিন্তু বাস্তবে অনলাইনে আয়ের চিত্রটা একটু ভিন্ন। আসলে আপনার যদি অনলাইনে কাজের দক্ষতা থাকে তাহলে আউটসোর্সং কেন অন্য যেকোন সেক্টরে আপনি খুব সহজেই সফল হতে পারেন। আউটসোর্সিং এর ভিন্নমাত্রা হল, এখানে (আউটসোর্সিং) কাজ করা এবং অনলাইনে কাজ পাবার স্বাধীনতা আপনার আছে যা আপনি অন্য কোন পেশায় তা পাবেন না বললেই চলে। পার্থক্য হল আপনার পরিশ্রমের সঠিক মূল্যায়ন এখানে পাবেন এবং এখই সাথে উপযুক্ত পাওনা পাবেন, অন্যান্য পেশায় যার জন্য প্রতিনিয়ত কর্তাদের সঙ্গে কর্মকর্তাদের মন কাষাকষি প্রতিনিয়ত লেগেই থাকে, যা আউটসোর্সিং করলে আপনি পাবেন না। এক কথায় আউটসোর্সিং হল উপযুক্ত কাজ করে এবং তা থেকে সহজ উপায়ে আয় করার একটি অন্যতম মাধ্যম। যেখানে আপনার সফল হতে হলে, অবশ্যই আপনাকে প্রথমেই দক্ষতা অর্জন করতেই হবে, এবং কাজ করার জন্য আপনাকে সঠিক মার্কেটপ্লেস আসতে হবে।

                       আউটসোর্সিং কি ?

আউটসোর্সিং হচ্ছে তথা ফ্রিল্যান্সিং শব্দের মূল অর্থ হল একটি স্বাধ পেশা। অর্থাৎ স্বাধীনভাবে কাজ করে আয়ের একটি অন্যতম পেশা। একটু সহজ ভাবে বলতে চাইলে, ইন্টারনেট ব্যাবস্থার মাধ্যমে অন্যকোন বা ভিন্ন ভিন্ন প্রতিষ্ঠান ভিন্ন ভিন্ন ধরনের কাজ প্রদান করে তা ফ্রিল্যান্সারদের মাধ্যমে তা করিয়ে নেয়া। নিজের প্রতিষ্ঠান বাদে অন্য কোন ব্যক্তি অথবা কোন প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে এসব কাজ করানোকেই মূলত আউটসোর্সিং বলে। যারা আউটসোর্সিংয়ের কাজ করেন, মূলত তারাই হলেন ফ্রিল্যান্সার।

                      আউটসোর্সিং কাজ  কি ?

আউটসোর্সিং সাইট বা অনলাইন মার্কেটপ্লেসে আমরা বিভিন্ন ধরণের কাজ পেতে পারি। যেমন: সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, নেটওয়ার্কিং ও তথ্যব্যবস্থা, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, লেখা ও অনুবাদ, ডিজাইন ও মাল্টিমিডিয়া, প্রশাসনিক সহায়তা, গ্রাহকসেবা (Customer Service), ব্যবসাসেবা, বিক্রয় ও বিপণন ইত্যাদি। এই প্রকার কাজ ইন্টারনেট ব্যাবস্থার মাধ্যমে করে দিতে পারলেই অনলাইনে আয় করা আপনার পক্ষে সম্ভব। এছাড়াও আরও বিভিন্ন ধরনের উন্নতমানের কাজের ব্যাবস্থা আছে এই বিশাল বড় আউটসোর্সিং জগতে। কিন্তু আমাদের দেশের কিছু অসাধু ব‌্যাবসায়ী বাংলাদেশের সাধারণ মানুষকে ধোকা দিয়ে যাচ্ছেন প্রতিনিয়তই নানা পদ্ধতির মাধ্যমে আউটসোর্সিং করে খুব সহজেই আয় করার নামে মানুষকে ধোকা দিচ্ছে। বাস্তবে উপরে উল্লিখিত কাজগুলোতে যদি আপনার কোন কারিগরি কাজের দক্ষতা থাকে তবেই কেবলমাত্র আউটসোর্সিং জগতে থেকে আপনি ভালো আয় করতে পারবেন। কোনপ্রকার কাজের দক্ষতা ছাড়া এবং আউটসোর্সিং সম্পর্কে ভালকোন কিছু জানা না থাকলে ধোকা খাওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই। তাই আগে কাজ করার জন্য নিজেকে তৈরী করুন, তারপর এই পেশায় আসার চিন্তা ভাবনা করুণ। সত্যি বলতে আপনি যদি আপনার কাজের দক্ষতাকে সঠিকভাবে কাছে লাগাতে পারেন তাহলেই আপনাকে দিয়েই সম্ভব এই সেক্টরে দেশের হয়ে হাজার হাজার ডলার ইনকাম করা। শুধু দরকার ইনকামের সঠিক দিক নির্দেশনা, এবং যে কাজ করবেন তার সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জন করা।

   freelancing

আউটসোর্সিং কেন করবেন এবং কিভাবে করবেন ?

আমাদের বাংলাদেশে এবং বিশ্বের প্রায় দেশেই আউটসোর্সিং জগতে কাজ করে এমন লক্ষ লক্ষ ফ্রিল্যান্সার রয়েছেন। কিন্তু তাদের সবাই শতভাগ সফল হতে পারেননি। সর্বদা মনে রাখবেন আউটসোর্সিং একটি স্বাধীন ও মুক্ত পেশা, সেখানে আপনার ব্যক্তিগত জবাবদিহিতার চেয়ে আপনার কাজের জবাবদিহিতা অনেক বেশি। আপনি এই জগতে আসবেন অবশ্যই আয় করার জন্য, এবং আপনি যার কাছ থেকে এই উপার্জন করবেন তাকে কোন না কোন সেবা প্রদান করেই এই উপার্যন আপনাকে করতে হবে। তাই যদি হয়, আপনার কাজ যদি সঠিক না হয়, আপনার কাজে যদি কোন প্রকার জবাবদিহিতা না থাকে, আপনি যদি কাজ করার ক্ষেত্রে অনেক বেশী মনযোগী না হন, আপনার কাজে যদি অনেক বেশী স্বচ্ছতা না থাকে তাহলে আপনার পক্ষে এই সেক্টরে সফল হওয়া সম্ভব নয়। আউটসোর্সিং এ সর্বদা আপনি নিজেকে দিয়ে মূল্যায়ন করবেন। আপনার কাজের দক্ষতায় আপনাকে উপরের স্তরে যাওয়ার রাস্তা তৈরি করে দিবে, তাই আপনাকে যে কাজ দেওয়ার হবে সেই কাজ যদি আপনি সঠিক ভাবে সঠিক সময়ের মধ্য দিয়ে কাজটি ক্ল্যায়িন্তকে প্রদান করতে না পারেন তাহলে আপনাকে সেখান থেকে ছিটকে যেতে হবে সেই মুহূর্তেই, আর যদি তা পজিটিভ হয়, তাহলে সেও খুশি থাকবে এবং আপনারও ভবিষতে কাজ পাবার সম্ভাবনাও বেড়ে অনেক খানি বেড়ে যাবে।
Previous
Next Post »